মুহাম্মদ আমির উদ্দিন কাশেম, জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার:-
কুলাউড়া শরীফপুরে হুসনা আক্তার (২৩) নামে এক কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। হুসনা মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লালারচক গ্রামের প্রবাসী আব্দুল মালেকের মেয়ে।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুপুরে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়, এবং পরে ময়নাতদন্ত শেষে রাত ৮টায় তাকে বাড়িতে নিয়ে এসে বাদ এশা দক্ষিণ লালারচক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
হুসনার পরিবার সূত্রে জানা যায় গত কিছুদিন আগে হুসনা আক্তারের বিবাহ ধার্য করা হয়েছিল একই ইউনিয়নের তেলিবিল গ্রামের বাসিন্দা আরব আমিরাত প্রবাসি হাজী ফারুক মিয়ার ছেলে প্রবাসি মুকিত মিয়ার সাথে, এবং বিবাহের দিন তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৯/০৫/২০২২ইং তারিখে, বিবাহের কেনাকাটা প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে, কিন্তু এরই মধ্যে হুসনার প্রেমিক উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের কটারকোনার শিপন মিয়া (২৫) বর ও বরের পিতার কাছে শিপন মিয়া ও হুসনা আক্তারের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশ করে, এতে বরের পক্ষ থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে, তাতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন হুসনা।
এই ঘটনার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগন প্রেমিক শিপন মিয়ার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে হুসনাকে সে বিয়ে করার জন্য চাঁপ দিলে শিপন হুসনাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে, এতে কোন উপায়ান্তর না পেয়ে গত ১৮/০৫/২০২২ ইংরেজি মৌলভীবাজার জেলা জর্জ কোর্টে হুসনা আক্তার বাদি হয়ে প্রেমিক শিপন মিয়ার বিরুদ্ধে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করেন।
মৃতের নানার বক্তব্য অনুযায়ী একই দিন মামলা দায়ের করে মৌলভীবাজার থেকে সিএনজি চালিত অটোতে করে বাড়িতে আসার সময় স্থানীয় চাতলাপুর বাজারে এসে হঠাৎ তার শরীর খারাপ হয়ে যায়। এ সময় হুসনা পানি খেতে চাইলে, তখন তার মা দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে একটি দোকান থেকে পানি কিনে দেন, পানি পান করার সাথে সাথে হুসনার শরীরের অবস্থা আরও অবনতির দিকে যায়, এবং দ্রুত কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো বলেন ওইদিন রাতেই হুসনার বাবা আব্দুল মালেক আরব আমিরাত থেকে কুলাউড়া থানায় যোগাযোগ করে এই বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেন।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় হুসনার বাড়িতে যান কুলাউড়া থানার এসআই শাহ্ আলম। তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যায় পরিবারের সঙ্গে শমসেরনগর বাজারে যায় হুসনা। সেখানে যাওয়ার পর হঠাৎ তার শরীর খারাপ হয়ে যায়। এ সময় হুসনা পানি খেতে চায়। তখন তার মা দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে একটি দোকান থেকে পানি কিনে দিলে খাওয়ার সাথে সাথে হুসনার শরীরের অবস্থা আরও অবনতির দিকে যায়। দ্রুত তাকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে হুসনার বাড়িতে পৌঁছে লাশ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর হুসনার মৃত্যুর বিস্তারিত কারণ জানা যাবে।
এছাড়া হুসনার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply