বরগুনা জেলা সংবাদদাতা: মুক্তির সংবাদ
বরগুনায় জমি বিরোধজকে কেন্দ্র করে এক গৃহবধূকে খুন করার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে গুরুতর জখম সহ শ্রীলতাহানির অভিযোগ । আহত আকলিমা বেগম তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বড় অংকুজানপাড়া গ্রামের আমজেদ হোসেনের মেয়ে । ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত অনুমান ৯ টায়। গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, আকলিমা বেগম তার বোন মোর্শেদার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ওৎ পেতে থাকা একদল নামদারী সন্ত্রাসী আলী হোসেন পিতা মেহের আলি, খোকন পিতা শাজাহান মুন্সি সহ আরও অপরিচিত ৩/৪ জন ব্যক্তি তার গতিপথ লক্ষ্য করে তাকে পথ রুদ্ধ করে আটক করে। তাকে টানাহেঁচড়া করে শ্রীলতাহানি ঘটায়। গৃহবধূ আকলিমার গলার চেইন কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচতে ধস্তাধস্তি করলে একপর্যায়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, জমি আত্মসাতের জন্য ওই সন্ত্রাসীরা তাকে খুন করে লাশ গুম করতে চেয়েছিল। উল্লেখ্য অভিযুক্ত আলী হোসেন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে জমি দখল ও ভূয়া কাগজপত্র জালিয়াতি করে অন্যের জায়গা নিজের নামে নিয়ে বিক্রী করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ মর্মে গত ৮ নভেম্বেবর ভুক্তভোগী সেতারা বেগম ও তার পরিবার উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের অংকুজান পাড়া গ্রামে এক মানব বন্ধনও করেছেন প্রভাবশালী আলী হোসেন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। যাহা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। সেই মানববন্ধনে আকলিমা বলেছিলেন, উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়অংকুজানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তার বাবা আমজেদ হোসেন ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর মারা যায়।
এর পর একই এলাকার প্রভাবশালী আলী হোসেন ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারী আমজেদ হোসেনের মারা যাওয়ার দুই মাস পর তার টিপসই জালিয়াতি করে ১৮ শতাংশ জমি মাত্র ৪ হাজার টাকায় বায়নার একটি কাগজ তৈরি করেন। এর পরে বায়নার কাগজের সূত্রে ঐ জমি প্রভাবশালী আলী হোসেন,ইউসুফ হাং ও হারুন অর রশিদ মিলে ভূয়া দলিলের মাধ্যমে অন্যত্র বিক্রী করে দেন। ভুক্তভোগী আকলিমা গংরা এত বছরেও জানতে পারেনি তাদের জমি এভাবে জালজালিয়াতি করে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১৯৯৪-৯৫ সালের একটি ভুয়া দলিল দেখিয়ে সেই জমিও জোর জবরে দখল করেছেন। প্রভাবশালী আলী হোসেন গং
মৃত আমজেদের বড় মেয়ে আকলিমা বেগম খবর পেয়ে আদালতে জালজালিয়াতির একটি মামলা দায়ের করেন। আরও জানা যায়, বুড়ির চর ইউনিয়নের বুড়ির চরগ্রামের মৃত তছিম উদ্দিনের পুত্র ইউসুফকে দিয়ে ঐ জাল দলিল ও বায়না পত্রটি তৈরি করে আলী হোসেন যা ইউসুফের মোবাইল ফোনে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে স্বীকার পেয়েছেন। এছাড়া ইউসুফের বোনের স্বামী আমজেদ হোসেন মৃত আমজেদ সেজে ১৯৯৪-৯৫ সালে জাল দলিল দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মৃত আমজেদ হোসেনের স্ত্রী সেতারা বেগম বলেন, প্রভাবশালী আলী হোসেন জালিয়াতির মাধ্যেমে আমার স্বামীর টিপসই জালিয়াতি করে ১৯৯৪-৯৫ সালের একটি দলিল এবং তার মৃত্যুর দুই মাস পর অন্য একটি জমির বায়না নিয়ে গেছেন। যখন জমির বায়না বা দলিল নিছে তার দুই মাস আগে আমার স্বামী মারা গেছে। মামলার পর এখন বায়না পত্রটি আলী হোসেন অস্বীকার করে।তবে ১৯৯৪-৯৫ সালের ভূয়া দলিলটি স্বীকার করে জমি দখল রেখেছে। আমরা তার টিপসই পরিক্ষা করার অনুরোধ করছি।এবং সরকারের কাছে অনুরোধ করবো যাতে আমার জমি আমি ফিরিয়ে পাই।
এই আলী হোসেন বিভিন্ন সময় আমাদের হুমকি দামকি দিয়ে আসছে।
এব্যাপারে তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবুউল কবির জোমাদ্দার ঘটনার বরাত দিয়ে জানান, আলী হেসেন জালজালিয়াতী করেছে।
এ ব্যাপারে তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, আমি ঘটনা শোনার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply